Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
চলতি পথিক হঠাৎ থেমে, জিগায় কাছে গিয়ে,
এই-যে খুকী কাঁদছিস কেন্, মাথা-টুকুন নুইয়ে?
কী হয়েছে? কে বকেছে? বলরে নিকট আমার?
এমন শিশু বাচ্চাকে, বকলো কোন-সে চামার!
খুকী এবার মাথা তোলে, উপর পানে তাকায়,
মুখটি যেন বেজায় শুকনো, তাইতো দেখা যায়!
পথিক বলে কোথায় থাকিস, কোথা তোর বাড়ী?
আমার কাছে বলতে তোর, কেনো এতো আড়ি?
খুকী এবার আধো কণ্ঠে অগোছালো ভাবে বলে,
হারাদিন খাইনাই কিছু সাব,পেটটি গেলো জ্বলে!
পথিক এবার অবাক হয়ে, হাতটি বুলায় মাথে,
দুহাত দিয়ে টেনে তুলে বলে, আয় আমার সাথে।
পার্শ্ববর্তী হোটেলে নিয়ে, খাওয়ায় পেটটি ভরে,
খুকীটি তাই খুশিতে-যেন,কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
পথিক এবার জানতে চায়, থাকিস তুই কোথায়?
তোর বাড়িটি দেখাতে কি, নিয়ে যাবিরে আমায়?
এবার বলতো সব খোলে,কে আছেরে তোর ঘরে?
খুকী বলে মা ছাড়া কেউ নাই,সেও ভোগছে জ্বরে।
পথিক এবার বুঝতে পারে তাঁহার কী করণীয়,
ভাবে মনে আজ তার জন্মদিনটি হোক স্মরণীয়!
এক প্যাকেট খাবার দিলো,সাথে কিছু ঔষধ ফল,
খুকীকে এবার বলে পথিক, চলরে তুই ঘরে চল?
পথের ধারে খুপরি ঘরে খুকীটি, মা মা বলে ঢুকে,
অভাগী মায় কেঁদে দিয়ে, নেয় টেনে তাঁহার বুকে।
রচনা ০৩-০৭-২০২২ খ্রিঃ ময়মনসিংহ (সংরক্ষিত)
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
একটা সময় তুই এলি-ফিরে, পুরানো নদী তীরে!
যবে সেই নদীটি জল অভাবে,শুকায় ধীরে-ধীরে!
নদীর ছিলো যবে পূর্ণ-যৌবন,দুকূল জলে ভরপুর,
তুই তখন কাটতি সাঁতার, ঝাঁপিয়ে সকাল দুপুর!
নদীটির সেই বাড়ন্ত প্রহরে, সখ্য হয় তোর সনে,
সকাল সন্ধ্যা বলেছিস কথা, তোরাই দুই-জনে!
নদী তোরে জল দিত, স্নান করাতো, দিত প্রশান্তি,
তুই ছিলি বড়ো বেয়াড়া বেঢপ,করতি ভুল-ভ্রান্তি!
নদী তখন ঝিলমিল হেসে, বলতো দোলে দোলে,
আয়রে আমার প্রাণের সখা,আয় আমার কোলে।
তুই তখন ঝাঁপিয়ে পড়তি, সেই-না নদীর বুকে,
তোরে পেয়ে সেই নদীটি, কাটাতো সময় সুখে।
একদিন তোর কি-যে হলো, তুই হঠাৎ উধাও!
সেই নদী বিষণ্ন মনে তোরে খুঁজে পায়নি কোথাও!
তোর শূন্যতায় জল শুকায়ে,বার্ধক্য আসে কায়ায়,
তোরে নিখাদ বেসে-ভালো,পড়েছিল মোহ মায়ায়।
তোর তরে কেঁদে কেঁদে, একদিন সে সাঁঝে আসে,
রূপ জৌলুস ফুরিয়ে তার, মিলায় কাল বাতাসে।
তোর আগমনে খুশি বেজাড়,কিছু করেনি প্রকাশ,
শুষ্ক চোখে নির্বাকে,কিছু কি বলার রয় অবকাশ?
তোরে দেখে বুঝতে পারে, তুই আছিস বেশ সুখে,
তার যন্ত্রণা চাপাই থাক-না, পাথর চাপায় বুকে!
শীর্ণকায় ভাবে, সুদিনেই আসে অনেক সহচর,
রূপ-যৌবন রস ফুরালে, বিমুখে হয় সবাই পর!
রচনা ০১-০৭-২০২২ খ্রিঃ ময়মনসিংহ (সংরক্ষিত)
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
নিজেরে আজ মেরে ফেলছি
ভুইল্ল্যা গেছি নিজেরে,
এহন শুধু আত্মাটা আছে
দেহটাই পঁচন আগে থেকে।
পরিচয়টুকুও হারিয়ে ফেলছি
গোত্র তো গেছি সেই কবে ভুলে
হো! আইজ আমি জিন্দা লাশ!
বিলাপ করি সর্বনাশে।।
অঙ্গেতে আজ নাই'যে কাপড়
ছিড়ে নিয়েছে সে শকুনে,
বিষাক্ত বিষে বিষক্ষয়ে মরি
এখন যন্ত্রণাতে মিশে।।
গলার আওয়াজ সেও হারালাম
স্বর নেই,জোর নেই ভয়ে,
আত্মনাতে কেঁপে উঠছি ক্যাবল
প্রাণটাও যাবে বুঝি উড়ে।
তবুও সয়ে সয়ে ছিলাম
মেনে নিয়েছিলাম নিয়তিকে,
কিন্তু পাষাণহৃদয় অভদ্র গুলো
শিশুটাকেও নিয়ে গেলো তুলে!
দু'দিন পর আবর্জনার স্তূপে
পড়ে আছে দেখি দেহ,
থরথর করে কেঁপে দেহটা উল্টিয়ে দেখি
সেই ছোট্ট শিশু,সেই ছোট্ট শিশু।।
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
চলতি পথিক হঠাৎ থেমে, জিগায় কাছে গিয়ে,
এই-যে খুকী কাঁদছিস কেন্, মাথা-টুকুন নুইয়ে?
কী হয়েছে? কে বকেছে? বলরে নিকট আমার?
এমন শিশু বাচ্চাকে, বকলো কোন-সে চামার!
খুকী এবার মাথা তোলে, উপর পানে তাকায়,
মুখটি যেন বেজায় শুকনো, তাইতো দেখা যায়!
পথিক বলে কোথায় থাকিস, কোথা তোর বাড়ী?
আমার কাছে বলতে তোর, কেনো এতো আড়ি?
খুকী এবার আধো কণ্ঠে অগোছালো ভাবে বলে,
হারাদিন খাইনাই কিছু সাব,পেটটি গেলো জ্বলে!
পথিক এবার অবাক হয়ে, হাতটি বুলায় মাথে,
দুহাত দিয়ে টেনে তুলে বলে, আয় আমার সাথে।
পার্শ্ববর্তী হোটেলে নিয়ে, খাওয়ায় পেটটি ভরে,
খুকীটি তাই খুশিতে-যেন,কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
পথিক এবার জানতে চায়, থাকিস তুই কোথায়?
তোর বাড়িটি দেখাতে কি, নিয়ে যাবিরে আমায়?
এবার বলতো সব খোলে,কে আছেরে তোর ঘরে?
খুকী বলে মা ছাড়া কেউ নাই,সেও ভোগছে জ্বরে।
পথিক এবার বুঝতে পারে তাঁহার কী করণীয়,
ভাবে মনে আজ তার জন্মদিনটি হোক স্মরণীয়!
এক প্যাকেট খাবার দিলো,সাথে কিছু ঔষধ ফল,
খুকীকে এবার বলে পথিক, চলরে তুই ঘরে চল?
পথের ধারে খুপরি ঘরে খুকীটি, মা মা বলে ঢুকে,
অভাগী মায় কেঁদে দিয়ে, নেয় টেনে তাঁহার বুকে।
রচনা ০৩-০৭-২০২২ খ্রিঃ ময়মনসিংহ (সংরক্ষিত)
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
একটা সময় তুই এলি-ফিরে, পুরানো নদী তীরে!
যবে সেই নদীটি জল অভাবে,শুকায় ধীরে-ধীরে!
নদীর ছিলো যবে পূর্ণ-যৌবন,দুকূল জলে ভরপুর,
তুই তখন কাটতি সাঁতার, ঝাঁপিয়ে সকাল দুপুর!
নদীটির সেই বাড়ন্ত প্রহরে, সখ্য হয় তোর সনে,
সকাল সন্ধ্যা বলেছিস কথা, তোরাই দুই-জনে!
নদী তোরে জল দিত, স্নান করাতো, দিত প্রশান্তি,
তুই ছিলি বড়ো বেয়াড়া বেঢপ,করতি ভুল-ভ্রান্তি!
নদী তখন ঝিলমিল হেসে, বলতো দোলে দোলে,
আয়রে আমার প্রাণের সখা,আয় আমার কোলে।
তুই তখন ঝাঁপিয়ে পড়তি, সেই-না নদীর বুকে,
তোরে পেয়ে সেই নদীটি, কাটাতো সময় সুখে।
একদিন তোর কি-যে হলো, তুই হঠাৎ উধাও!
সেই নদী বিষণ্ন মনে তোরে খুঁজে পায়নি কোথাও!
তোর শূন্যতায় জল শুকায়ে,বার্ধক্য আসে কায়ায়,
তোরে নিখাদ বেসে-ভালো,পড়েছিল মোহ মায়ায়।
তোর তরে কেঁদে কেঁদে, একদিন সে সাঁঝে আসে,
রূপ জৌলুস ফুরিয়ে তার, মিলায় কাল বাতাসে।
তোর আগমনে খুশি বেজাড়,কিছু করেনি প্রকাশ,
শুষ্ক চোখে নির্বাকে,কিছু কি বলার রয় অবকাশ?
তোরে দেখে বুঝতে পারে, তুই আছিস বেশ সুখে,
তার যন্ত্রণা চাপাই থাক-না, পাথর চাপায় বুকে!
শীর্ণকায় ভাবে, সুদিনেই আসে অনেক সহচর,
রূপ-যৌবন রস ফুরালে, বিমুখে হয় সবাই পর!
রচনা ০১-০৭-২০২২ খ্রিঃ ময়মনসিংহ (সংরক্ষিত)
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
নিজেরে আজ মেরে ফেলছি
ভুইল্ল্যা গেছি নিজেরে,
এহন শুধু আত্মাটা আছে
দেহটাই পঁচন আগে থেকে।
পরিচয়টুকুও হারিয়ে ফেলছি
গোত্র তো গেছি সেই কবে ভুলে
হো! আইজ আমি জিন্দা লাশ!
বিলাপ করি সর্বনাশে।।
অঙ্গেতে আজ নাই'যে কাপড়
ছিড়ে নিয়েছে সে শকুনে,
বিষাক্ত বিষে বিষক্ষয়ে মরি
এখন যন্ত্রণাতে মিশে।।
গলার আওয়াজ সেও হারালাম
স্বর নেই,জোর নেই ভয়ে,
আত্মনাতে কেঁপে উঠছি ক্যাবল
প্রাণটাও যাবে বুঝি উড়ে।
তবুও সয়ে সয়ে ছিলাম
মেনে নিয়েছিলাম নিয়তিকে,
কিন্তু পাষাণহৃদয় অভদ্র গুলো
শিশুটাকেও নিয়ে গেলো তুলে!
দু'দিন পর আবর্জনার স্তূপে
পড়ে আছে দেখি দেহ,
থরথর করে কেঁপে দেহটা উল্টিয়ে দেখি
সেই ছোট্ট শিশু,সেই ছোট্ট শিশু।।
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
একটা সময় ছিলাম আমি তোর খেলার সাথী,
সারা-দিনমান চলেছি ছুটে, সারা-গাঁ মাতি।
একটা সময় ছিলাম আমি তোর প্রিয় সহপাঠী,
একদিন না গেলে ক্লাসে, সে-দিনটি হতো মাটি!
একটা সময় ছিলাম আমি যেন,অক্সিজেন তোর!
লম্বা-নিঃশ্বাস ফেলতি দেখে, দুপুর বিকাল ভোর!
একটা সময় ছিলাম আমি তোর আত্মীয় আত্মার,
একদিন না করলে দেখা, খবর ছিলো আমার!
একটা সময় ছিলাম আমি তোর স্বপ্নের বাতিঘর,
কথা ছিল কেউ কোনোদিন, হবো-না কারও পর!
একটা সময় সেই-কথার গিট্টু, কাঁচি দিয়ে কেটে,
এমন আচরণ করলি-রে তুই, যেন আমি এঁটে!
একটা সময় হলাম-রে আমি, তোর'ই চক্ষুশূল!
নেই-তো জানা তোর সনে, কি করেছিলাম ভুল?
একটা সময় ঘুরঘুর করেছি, তোর পিছু পিছু,
না পেয়ে সাড়া এসেছি নীরবে শির করে নীচু!
একটা সময় দিলি-উড়াল, ছয় বেহারায় চড়ে,
নির্বাকে দেখি সেদিন, পোষা পাখি যেতে উড়ে!
একটা সময় আমার চোখে আনলি-রে তুই জল,
এখন আমি দুঃখের অরণ্যে, শুধুই মাকাল ফল।
একটা সময় তোর ললাটে, ভাসে বিষাদ রেখা,
তুইনা বল্লেও নিছি বুঝে, সেদিন পথে হলে দেখা।
একবারও তুই জানলি-না-রে, ওরে নিরেট সাচি?
তোর গা ছুঁয়ে দেয়া কছমে, আজও একাই আছি।
রচনা ২৯-০৬-২০২২ খ্রিঃ ময়মনসিংহ (সংরক্ষিত)
আসিফ আরমান
Star Point: 4.05 of 5.00
পদ্মা তোমার বুকের ওপর
আমার স্বপ্ন দৃশ্যমান,
তোমার তরে স্বপ্নে আমার
এসেছে ফিরে নতুন প্রাণ।
পদ্মা সেতু, আমার সেতু
আমার টাকায় গড়া,
প্রতি ইঞ্চি ইঞ্চি
শুরু থেকে শেষ
ভালোবাসা দিয়ে ভরা।
জাজিরা থেকে মাওয়া যেতে
লাগবে না আর বেশিক্ষণ,
মুক্ত পথে চলবে গাড়ি
চলবে ছুটে হন হন।
দৈর্ঘ্যে সেতু ৬ কি.মি.
প্রস্থে আঠারো মিটার,
৪১ স্প্যানে শোভা পেয়েছে
বিয়াল্লিশ টি পিলার।
চারটি লেনে চলবে গাড়ি
পৌঁছাবে এক নিমিষে,
ভাগ্য দক্ষিণে খুলবে এবার
দুঃখ যাবে মিশে।
সবার স্বপ্নের পদ্মা সেতু
রূপ নিয়েছে বাস্তবে,
সব ব্যাথা তাই ভুলে গিয়ে
প্রাণ খুলে আজ হাস তবে।
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
গেয়ে গান বরষার,এসেছে ফিরে ফের ঐ আষাঢ়,
অম্বর মেঘেরা দেয় সাড়া,ধরণীকে ভালোবাসার।
বরষার জয়গানে সজল শুষ্ক-প্রাণে সিক্তে ধরণী,
প্রগাঢ় প্রণয় পরশে,জাগে ভূতল হরষে পরশমনি।
সাজে ধরণী রূপের রানী, ফুল-ফল ডালে ডালে,
সাজে কদম নববধু-বেশে,ঐ বিজনে প্রণয় কালে।
পরে কর্ণ-নসিকায় নানা ভঙ্গিমায়,রাঙা রঙিন দুল,
ঝাড়-বাতি রূপে, বৃক্ষের পরতে, শিখর হতে মূল।
মেঘেরা পড়বে লুটে কামনার মোহে ধরণীর বুকে,
তৃণ-লতা কিশলয় উল্লসিত,নব স্পর্শ পুলক সুখে।
মাতে কুঞ্জবনে নিরজনে, মাতালিত মধুময়-ক্ষণে,
বর্ষা লীলারত ধরায় অবিরত,ঋতু ধনি আগমনে।
হাঁকে গর্জনে আসবে বিজনে, সিক্ত হবে মৃত্তিকা,
প্রগাঢ় প্রণয়ে মহা-মিলনে, ফুটবে কলি বালিকা।
বরষার আশে রয় পরবাসে, শাঁখা পল্লব ফাঁকে,
বরিষা আসে উড়ে, ঝমঝম সুরে জড়াতে তাকে।
ধরণীর এ ভূখণ্ডে, মৃদু-মন্দে চলে প্রকৃতির সনে,
অবলীলা সারাবেলা, প্রণয় খেলা, নিবিড় মনে।
নেই উহাদের প্রেমে বিরহ অনল, নেই কভু বিবাদ,
প্রকৃতির ক্যানভাসে, শাশ্বত প্রণয়ের হয় আবাদ।
রচনা ১৬-০৬-২০২২ খ্রিঃ ময়মনসিংহ (সংরক্ষিত)
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
সুরে সুরে বাঁধি ধীরে চৈতন্যের ডাকে
মায়ায় পুষে আগলে ধরে রাখি সারাবেলা
খেয়ার পালে স্রোতের হাওয়ায় ভেসে
সমুদ্র মোহনায় মাতি সাহারার খেলা।
মেহেদী হাসান
Star Point: 3.76 of 5.00
তুমি আমার মাতাল হাওয়া
তুমিই প্রিয় অসুখ!
তুমি আমার পড়ন্ত বিকেলের
চা এর শেষ চুমুক!
তুমি আমার কাব্য গাঁথা
তুমিই রূপকথা....
তুমি আমার কান্নার রোল
তুমিই লুকানো ব্যথা!
তুমি আমার কথামালা
তুমিই তার ছন্দ!
তুমি আমার সদ্য ফোঁটা
মিষ্টি বেলীর গন্ধ!
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
বেঁচে থেকেও যাচ্ছি মরে
জলন্ত অগ্নিগিরে,
প্রাণটা আমার যাচ্ছে উড়ে
অভিমানের সুরে।।
দমফাটা এই আর্তনাদে
বুকটা যাচ্ছে ফেটে,
অশ্রু চোখে কান্নারত
ভাসছি কেবল স্রোতে।
প্রেমে মরণ- কয় হাসানে
দিয়ে গেছে প্রাণ,
এমন রোগে মরছি বিষে
আত্মঘাতী মোহে।।
মেহেদী হাসান
Star Point: 3.76 of 5.00
স্বপ্ন তুলির রঙ্গ ছড়িয়ে
আঁকছি তাহার দেহ
জানিয়ে দিও সেই পাখিটার,
দেখা পেলে কেহ।
যত্ন করে রাখবো তারে
আমার হৃদয় মাঝে
ভালবাসার গল্প বুনে,
নিত্য নতুন সাজে।
মেহেদী হাসান
Star Point: 3.76 of 5.00
প্রেম আজ নগ্নতার হাটে-
বিকিয়ে যাওয়া পণ্য...!
কিছু প্রেম পেয়েছে আলো-
বাকি সব সারশূন্য..!!
কেহ প্রেম পেয়ে করেছে হেলা-
ভেবেছে অতি নগন্য..!
কেউ বা প্রেমের আলো পেয়ে-
জীবন করেছে ধন্য..!
মেহেদী হাসান
Star Point: 3.76 of 5.00
ভালো ভালো কথা বলি-
ভালো কথা জানি‚
ভালো কথা নিয়ে নিয়ে-
করি কানাকানি;
এখানে ওখানে কতো-
শুনি নীতি বাণী‚
ভালো ভালো কথা শুনে-
ভরে মন খানি।
ভালো কথা খুব ভালো-
ভালো করে জানি‚
তবু ক’জন বলো‚ ভালো-
কাছে টেনে আনি।
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
অবচেতন
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
তারিখঃ ২৫/০৫/২২
-
আমি সেই ক্ষয়ে যাওয়া পাথর
যা ক্ষয়ে ক্ষয়ে নির্বিঘ্নে হারিয়ে যাচ্ছি
হয়তো পৌর ছায়াও শেষ হবে একদিন।
ক্ষণিকের বাহাদুরিতে মেতে উঠেছি অগ্নিতে
যারা এসেছে, যারা এখনো আছে বা আসবে!
তাদের জন্য ঠিক এই রাস্তাটাই রেখে দিলাম
ওরাও মাতবে মরণ নিয়ে খেলবে এবং হারবে।।
আমি সেই পাহাড়! অনেক উঁচু জুড়ে আছি
আমিও বিলুপ্ত- যা আধার নৈঋতে অবচেতন।
আমিও শেষ হবো, বিলীন হবো নৈরাজ্যে!
"জোর যার মুলুক তার" এটা কোন আইন?
কতটুকু জানি,কতটুকই বা মানি! এরা কারা!
গায়ের জোরে আজ শক্তিশালী, দেখাই বর্বরতা
মানব হয়ে- মানব খুন' পালিয়ে বেচে থাকা?
MD Rayhan Kazi
Star Point: 3.98 of 5.00
বসন্ত বরণ অঞ্জলি দিয়ে
মোঃ রায়হান কাজী
-------------------------------------
বসন্তের আগমনে কিঞ্চিত ইচ্ছে জাগে প্রাণে,
তোমায় নিয়ে হাজারো স্বপ্ন আঁকি বেকুল হৃদয়ে।
ফাগুনের আগমনে তোমায় নিয়ে রাস্তার মোড়ে,
কিছু ফুল কিনে গুঁজে দিতে চাই চুলের খোঁপাতে।
কোকিল পাখি ডাকছে দেখ কুহু কুহু মিষ্টি সুরে,
ফাগুন এসেছে দেখ হলদে গাধা ফুলের ভিড়ে।
কৃষ্ণচূড়ায় রাজপথ সেজেছ রুক্ষতা কাটে ধীরে ধীরে,
এ-তো সব নতুনের ভিড়ো তোমাকেই রাখি যত্ন করে।
ভালোবাসার এই উৎসবে হলুদের সমারোহে আঁচে,
বাসন্তীর রং পরিস্ফুট হয় যেন শাড়ীর আঁচলে।
আমি নব সংগীতের দরজায় কড়া নাড়তে চাই,
হলদে নীল পাঞ্জাবি পড়ে রিকশায় করে তোমার সাথে পথ চলাতে।
বৃক্ষ সাঁজে নতুন পল্ললে সজীবতা জাগে প্রাণে,
তোমার কোপালে চুম্বন এঁটে দিতে চাই সংগোপনে।
প্রকৃতির রঙিন প্রচ্ছেদে কবির কবিতার অমর ছন্দে,
বসন্তকে বরণ করতে চাই তুমি আমি মিলে ফুলের অঞ্জলি ছড়িয়ে।
MD Rayhan Kazi
Star Point: 3.98 of 5.00
গোধূলি লগ্নের পাখি
মোঃ রায়হান কাজী
--------------------
গোধূলি লগ্নের পাখি ফিরে আসে নীড়ে,
ধানে ভরা তরী খানি ঘাটে এসে ভিড়ে।
কৃষাণীরা ছুটে আসে নদীর ঘাটে,
ফসলের ঘ্রাণে অতিথিদের যে আহ্বান করে।
চুপ কেন আছো সখি এই অবেলাতে,
নাকি বরণ করবে না আমাদিগকে পুষ্প কুঞ্জ দিয়ে।
নাইবা করলে বরণ গোধূলিলগ্নে
তবে জেনে রাখ প্রিয়,
হারিয়ে খুঁজবে আমায় ধূসর নীড়ে।
আমার হৃদয় মাঝে যার স্থান,
সে হারিয়ে যাবে না আর।
তাহলে কোথায় সঞ্চিত রাখবে
বলো না কেন আমায়?
কেন হৃদয়ের গহীন কোণে
তোমায় বলতে হবে কী বার বার?
নাই-বা যদি বললে তাহলে কিভাবে বুজবো শুনি?
সব কথা বলে দিতে হয় না,
কিছু কথা হৃদয় দিয়ে পড়ে নিতে হয় বুঝলা।
হয়তোবা তবে প্রকাশ করার মাঝেও
কিছুটা স্বার্থকতা লুকিয়ে থাকে।
যা না বললে মনের দূরত্ব হাজার গুণ বাড়ে।
MD Rayhan Kazi
Star Point: 3.98 of 5.00
কিছুটা দীর্ঘশ্বাস
মোঃ রায়হান কাজী
৩০/০১/২০২২ইং
-----------------------------
এ অবেলায় কেন এলে কবি আমার দোরে?
জানি না গো প্রিয় হে স্বপ্নময়ী।
এ দেশান্তরে মাঝে তুমি ছিলে এতদিন কোন সে গোধূলি পাড়াতে,
আমিতো শুধু খুঁজে বেরিয়েছি তোমার চরণ ধ্বনি নির্জনে।
আমি যে অসহায় পারি না লিখতে হায়,
মনের ভাষা পড়েনিবো যদি সে চায়!
যাক বেলা শেষে, সূর্য ডুবু ভুবু,অন্য প্রসঙ্গে যাই
কারণটা কি জানা যাবে গোধূলিলগ্নের,
সখার এমন পরিবর্তন হয়েছে কী করে?
কবির সান্নিধ্যে যখন আসছি,
কিছু হলেও লিখতে পারব মনে হয়।
তা আমি জানি অন্তর দামী।
তোমার প্রশ্নের উত্তর পরে দিচ্ছি
আমার কাছে কি প্রত্যাশা করো বলো,
তুমি এক ভুবনের আমি এক ভুবনের
দূরত্ব যে অনেক কাছে আসবে কী করে?
অপেক্ষাটা না হয় কিছুটা দীর্ঘহোক আজ,
দূরত্ব কবু হয় না বাঁধা ওগো মনন বাসিনী,
কাছে আসো যদি আজি,
আগলে রাখবো তোমায়
রাত্রি নিশিতে দুবাহু আর পিঞ্জর দিয়ে
অমৃত সুধা প্রাণ করাবে কী পরমস্নেহে?
আমি সুন্দরী নয়,
সুন্দর একটা মন আছে এটা বলা যায়।
জমবে বেশ যদি তুমি থাকো রাজি
এক জায়গা ঘুমাই, চুপিসারে
যেটুকু জায়গায় তোমাকে রাখতে পারবো বলে মনে হয়।
বেশ বেশ বেশ রাখি এখন,
বাকিটা না হয় বলা হবে কাল।
অপেক্ষায় রইলাম....!!!
MD Rayhan Kazi
Star Point: 3.98 of 5.00
অশ্রুসিক্ত মেয়ে
মোঃ রায়হান কাজী
-----------------------------
শোনো, অশ্রুসিক্ত নয়নে কান্নায় বিজড়িত মেয়ে
আমার দিনগুলো কাঁটে ডিঙি নৌকায় ভর করে।
যেখানে কাঁদছে মন শূন্য কেন চোখের কোণ?
আমায় কাছে সময়টা নিছকই নির্জন।
রৌদ্র প্রকটময় দিনে কিছু মেঘ কিনে,
যদি ভাসিয়ে দেয় নীলের বুকে মধ্যে দুপুরে।
তবে তীব্র দাবির মিশিল হোক গগণ জুড়ে,
যেন তাঁর চোখের জলে পদ্মফুল না ভাসে পুকুরে।
আমিতো রোজ স্বপ্ন আঁকি জলের ধারা বৃষ্টিতে,
তোমার চোখের শ্রাবণ ঢাকি মিষ্টি রঙের ছাতায়।
যদি বলি বন্ধু হয়ে আমার হাত ছুঁবে নাকি,
অনেকটা পথ চলতে চাই তোমাকে নিয়ে সাথে।
যেমনি করে জল জমে থাকে সচ্ছ কাচে,
তেমনি করে থাকো না জ্বর হয়ে আঁচে।
তুমিও থাকো আমার মনে অসুখের মতো করে,
কী ভীষণ ছোঁয়াচে পুড়ছি আমি তোমার তাপে?
কান্নায় বিজড়িত মেয়ে বুকের ভিতর ব্যাথা জমেছে কী দীর্ঘশ্বাসে?
সকাল সাঁজে ধূসর মেঘের খামে দখিনা বাতাসে,
আঁচল ভাসিয়ে ফুলের গন্ধের অঞ্জলি ছড়িয়ে
ইচ্ছে হলে তুমিও ছুতে পারো খানিকটা আমাকে।
MD Rayhan Kazi
Star Point: 3.98 of 5.00
বজ্রকন্ঠে আলোকপাত
মোঃ রায়হান কাজী
----------------------------------
পূর্বপুরুষের সমাপ্তি ঘটেছে বহু বছর আগে,
বজ্রকন্ঠে আলোকপাত ঘটিয়েছে আবার কে?
প্রলয়ের আহ্বানে জেগেছে শক্রদল অসময়ে,
মৃত্যুর মহানিশা রৌদ্রময় খোলা প্রান্তরে।
নিঃশেষে রক্তাক্ত দিগন্ত গ্রাসে মহাবিশ্ব,
অশ্রুসিক্ত তরুণের পাপীরা হচ্ছে যে নিঃস্ব।
ঘন বর্ষায় রাত্রি কুহেলিকা বলিলো চুপিসারে,
মাঝ নদীতে ঝর উঠেছে খেয়াঘাট অনেক দূরে।
আতঙ্কিত সুরের দামামা বেজে ওঠে নির্জন প্রান্তে
বিন্দুমাত্র আশার সঞ্চার নাই ডুবিলো বুঝি যাত্রী।
উতপ্ত জলরাশি জুড়ে কাঁপছে থরথরিয়া দামিনী,
আচমকা হুঙ্কারে অবহেলিত জলাদ্বারে যামিনী।
জেগেছে অন্তরে পাপ সাপের হিসাব খোদার ভয়,
ভুলে লঙ্ঘিত সিন্ধুর প্রলয়ের নর্তকীর নিত্য।
প্রাণ বুঝি যায় তরী ছেড়ে মাঝি নির্ভীক চিত্তে,
নয়ন জুড়ে দেখছে চারদিক ভূতুরে প্রলয়ের গর্জন।
পথের মাঝে শূন্যতার সীমা এঁকে যাত্রীরা নয় নিষ্পাপ,
পাপ তাপের সমীকরণ অশ্রুসিক্ত তরুণের গণনার মঞ্চে।
নিঙ্গড়ে সব বহ্নি-রাগে বিষাদ যন্ত্রণা শুধু ভাসে,
তাইতো আজি রাত্রিনিশি বেদনার বাঁশি বাজে।
সুরের ব্যথায় প্রাণ উদাসীন মন যে কেমন করে?
রুদ্র তড়িৎ কান্না হাসি তারুণ্যেকে কিভাবে বেঁধে রাখি।
বজ্রকন্ঠে আলোকপাত ঘটিয়ে আহ্বান প্রলয়ে,
অশ্রুসিক্ত তরুণের শত্রুদল কাতরাচ্ছে রক্তাক্ত দিগন্তে।
Nikhil Ranjan Sen
Star Point: 4.07 of 5.00
গদ্যকবিতা : ১৯০৯২০২১
বিচ্ছিন্নতার রাজনীতি
নিখিলরঞ্জন সেন
============
ভাগের মায়ের কপালে গঙ্গা জোটনি!
রূপসি মায়ের গলায় দড়ি
দুপাশে টানাটানি আর কানাকানি!
এখানেই শেষ নয়
গঙ্গার জল গড়িয়ে চলেছে নিরন্তর!
মায়ের কপালে এই ভাগটুকুও হয়ে যায় অনিশ্চিত
ভাগের পরেও আরো ভাগ
খণ্ড খণ্ড করে দিয়ে চূর্ণ করতে চায় বুঝি!
মায়ের দুচোখে পূর্বেই ঝরেছিল অশ্রু সেইদিন
আগামীর কথা ভেবে আজ যেন কান্না-বাঁধভাঙা
মানে না কোনো বাধা
অশ্রুধারা শতধারে বয়ে যায়
জননী তবু নিরুপায়!
বেয়াড়া রাজনেতাদের ফায়দার লোভ
সবাই চায় নিজ নিজ ভাগ বুঝে নিতে
দুর্ভাগিনী মায়ের শেষ সম্বলটুকু
বুঝি বা অশ্রুধারায় ভেসে যায়
শোকসাগরে গিয়ে মেশে
করে দেয় উথালপাথাল!
অশান্ত সাগরের বুকে কালো ধোঁয়া
অকালবৈশাখির তাণ্ডব
কান্নার হাহাকারে পূর্ণ হয় আকাশ-বাতাস!
ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন দৃশ্যপটের আড়ালে দগদগে ঘা
শরীরে বিষাক্ত ক্ষতের দপদপানি
সেরে ওঠা কঠিন ব্যাপার!
গঙ্গার বুকে অশান্ত বন্যার ভাঙন
রক্তের স্রোতে মিশে যায়!
দিকে দিকে জাগে শুধু অসহায় মানুষের হাহাকার
ঢাকা পড়ে যায় শিয়ল-কুকুরের চিৎকারে!
Copyright : Nikhil Ranjan Sen
মৃণাল কান্তি রায়
Star Point: 4.26 of 5.00
Nikhil Ranjan Sen
Star Point: 4.07 of 5.00
গদ্যকবিতা : ০৭০৯২০২১
পরম আশ্রয়
নিখিলরঞ্জন সেন
============
হলদে চোখের চাউনি
সামনে বিষণ্ণতাময় বিবর্ণ বিকেল
এরচেয়ে বুঝি ব্যস্ততাময় দিবসই ছিল ভালো
যদিও ছিল তা জ্বালাযন্ত্রণাপূর্ণ
তবুও তো ছিল বৈচিত্রে পূর্ণ বর্ণময়!
সহ্য হয় না আর
এর চেয়ে অন্ধ রাত্রিও বুঝি ভালো
তাহলে অন্তত ঘুমিয়ে পড়তে পারি!
তলিয়ে যেতে চাই
অন্ধকার সমুদ্রের অতল গভীরে
স্বপ্নের মাঝে ফের
খুঁজে পেতে চাই আনন্দের সন্ধান!
পথ চলি ছায়াপথ ধরে
স্মৃতি যত বারে বারে উঁকি মারে
আলো-আঁধারির আবছায়ায়।
আমার পাশদিয়ে ছুটে চলে ধূমকেতুর রকেট
নক্ষত্রেরা দূরে জাগে মিটমিট করে
কৃষ্ণগহ্বরেরা মাঝে মাঝে উঁকি মারে
বুভুক্ষু ক্ষুধায় বিবরের বিদারণে!
চলি উষ্ণতার খোঁজে
ফিরে যেতে চাই না
ওই শীতল জীবনের বিষণ্ণতায়
তোমাকে খুঁজি আমি
স্মৃতিময় অতীতের বাহুবন্ধনে!
দেখতে পাই না কিছু ধোঁয়াময় হতাশার মাঝে
দমবন্ধ-অবস্থায় ঢলে পড়ি ধীরে ধীরে
পরম শান্তিময় জননীর কোলে!
Copyright : Nikhil Ranjan Sen
Nikhil Ranjan Sen
Star Point: 4.07 of 5.00
গদ্যকবিতা : ০৬০৯২০২১
বিপ্লবের অশনিসংকেত
নিখিলরঞ্জন সেন
============
প্রাগৈতিহাসিক লতাগুল্মের আড়ালে ওদের মত্ততা
নিরাবরণ হিংস্রতার দৌড়
করেছিল পৃথিবীর বুকে অদ্ভুত সাম্রাজ্য-কায়েম
খোলা আকাশের নিচে নেমে এসেছিল অন্ধকার
দাপিয়ে বেড়াতো ওরা পৃথিবীর বুকে
যত্রতত্র ঢেলে দিত বিষ!
হয়নি তা স্থায়ী বেশিদিন
অত্যাচারিত-বিক্ষুব্ধ মানবতার
সম্মিলিত আক্রমণে হয়েছিল পর্যুদস্ত ওরা
সর্পকুল করেছিল পলায়ন
চলে গেছিল পাতালে আত্মগোপনে
প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ফের মানুষের শাসন!
সুযোগের অপেক্ষায় ছিল ওরা
অবশেষে সুযোগ এসেছিল ফের উষ্ণতার তেজে
ফিরে এসেছিল ওরা দলে দলে
অবিশ্বাসের বিষে দিকে দিকে আতঙ্কের পরিবেশ
মানবতার দীর্ঘশ্বাসে পূর্ণ হয়েছিল আকাশ-বাতাস
ওদের বিষাক্ত ছোবলের মুখে ভীত শাসককুল
রক্ষা পেতে করেছিল পলায়ন!
কুকুরের গোপন যড়যন্ত্রমূলক আমন্ত্রণে
সাথি ড্রাগনের সাহায্যের আশ্বাসে সহজেই
করেছিল ওরা হৃত সাম্রাজ্য-উদ্ধার
ড্রাগনের মুখে অগ্নিশিখার তাণ্ডবে
হয়েছিল খাণ্ডব-দাহন
জেগেছিল বাস্তুহীন নিরীহ মানুষজনের হাহাকার!
জীবনের আদিম উচ্ছ্বাসে ওরা ছুটে চলে
তবু যেন হতাশায় ঝিমিয়ে পড়ে মাঝে মাঝে
যখন দেখে প্রতিবাদ দিচ্ছে মাথাচাড়া দিকে দিকে!
নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে একদিন ওরা
প্রাগৈতিহাসিক জন্তুদের মতো
ধ্বংসরূপী প্রাকৃতিক বিপ্লবের আগুনে
লুপ্ত হয়ে যাবে চিরতরে নবজীবনের উন্মেষে!
আদিম বন্য চিন্তাধারা যত চলে যাবে
ওদেরই ফসিলের সাথে শিলালিপি হয়ে
ভূগর্ভের গভীরে পাললিক শিলার অভ্যন্তরে
ইতিহাসে রয়ে যাবে জিঘাংসার সাক্ষী হয়ে!
অত্যাচরিত মানবতার দীর্ঘশ্বাস
অবদমিত আকাঙ্ক্ষার রুদ্ধ আক্রোশে
খুঁজে পাবে উদ্গিরণের জ্বালামুখ!
দিকে দিকে সেই যুগসন্ধিক্ষণের অশনিসংকেত!
ওদের ফসিলের সাথে
পুঞ্জীভূত জান্তব হিংস্রতার তেজ যত
সঞ্চিত থাকবে তরল অগ্নিরূপে ভূগর্ভভাণ্ডারে
ব্যবহৃত হবে শক্তিরূপে নব প্রজন্মের হাতে
মানবসভ্যতার কল্যাণসাধনে!
পৃথিবীর বুকে জাগবে সগৌরবে
কল্যাণকামী প্রগতিশীল সভ্যতার বিজয়কেতন!
Copyright : Nikhil Ranjan Sen
Badaruddoza Shekhu
Star Point: 3.98 of 5.00
জ্ঞানী // বদরুদ্দোজা শেখু
--------------------‘’’’-----------------------
হেঁটে যাচ্ছি দুপুরের রোদে পুড়ে' পুড়ে'
রাষ্ট্রপতি ভবনের রাজপথে পরিপার্শ্ব দৃশ্যের সভায় ,
দেখছি দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারীর প্রতিষ্ঠান
এ যাবৎ সেই পদ অলংকৃত করেছেন যাঁরা
একে একে তাঁদের তালিকা এলো মনের পর্দায় ,
চটক লাগলো চোখে তাঁর বাসভবনের বিশাল ফটক দেখে ,
নিরাপত্তা আবেষ্টনী দূর থেকে দূর্গ মনে হলো ।
ভবনের গঠনশৈলীর আনুষঙ্গিক বহর
দেখতে দেখতে বিস্ময়-আপ্লুত মনে
সবার মধ্য থেকে ভাস্বর উঠলেন জেগে
জ্ঞানী জৈল সিং যিনি
রাজীব সরকারের কালা বিল ডাক-বিল
প্রত্যাখান করেছেন বারবার বিবেকের বলিষ্ঠ নিষ্ঠায় ,
ধন্য জ্ঞানী জৈল সিং যিনি পত্র-পত্রালির
নাগরিক ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষা করেছেন মৌলিক ও
গণতাণ্ত্রিক প্রজ্ঞায় ,যিনি এদেশের সর্বোচ্চ পদের
মর্যাদাকে উচ্চে তুলে ধরেছেন তুচ্ছ ক'রে সব পার্শ্বচাপ
প্রলোভন দলবৃত্ত রাজনীতি খোসামুদে সংখ্যা-গরিষ্ঠ সাংসদ ।।
( ১৮ লাইন )
© বদরুদ্দোজা শেখু
--------------------------
Badaruddoza Shekhu
Star Point: 3.98 of 5.00
জুম্মা মসজিদ // বদরুদ্দোজা শেখু
-----------------------------------------------------‘--
পুরনো শহরটায়
কারফিউ লেগে আছে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার
ইতস্ততঃ কানাঘুষো উত্তেজনা আর
আশঙ্কার জীবন্ত সমাধি যেন ক'দিন থেকেই
অন্তরীণ জন-জীবনের আর্তনাদ
ইট পাথর কংক্রীট আর দেয়ালের
দূরূহ আড়ালে , ইচ্ছা ছিল
ঈদের নামাজ পড়বো ঐতিহাসিক ওই
জুম্মা মসজিদে অন্ততঃ আত্মতুষ্টির
আনন্দে ,একটি বার দুর্লভ সুযোগ পাওয়ায় ।
কিন্তু হলো না। পরিস্থিতি প্রতিকূল । অবশ্য
দিল্লীর অন্যতম দ্রস্টব্য বলেও কিছু গুরুত্ত্ব আছে ওখানে যাওয়ার ,
ধর্মাধর্ম রাজনীতি কূটঘাত
ইত্যাদির ঊর্দ্ধে উঠে যদি যাওয়া যায় ।
বিষণ্ণ আমার মন অঘ্রানের
প্রতীক্ষিত পাকা ধান গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কাটতে না-পারা
কৃষকের মতো অসহায়, উপেক্ষিত ।
সবুরে মেওয়া ফলার কোনো ঐশ্বরিক
ইঙ্গিতের আশায় মৌন হ'য়ে দিনকাল গুণে যাওয়া ছাড়া
অন্য গতি নাই , তাই যে-কোনো জামাতে
যথারীতি ঈদ পার ক'রেই দিলাম ।
দু'টো মাস কেটে' গেছে কবে ।
কারফিউ উঠে গেছে , ( যদিও সদাই সম্ভাবনা নতুন দাঙ্গার ),
সুযোগ হয়নি জুম্মা মসজিদে যাওয়ার । শেষ দিনে কোনোক্রমে
হন্তদন্ত হ'য়ে সময়ের দাক্ষিণ্য পাওয়ার অনুমানে অকস্মাৎ
সেখানে গিয়েই তার একটি ফটক খোলা পেয়ে দ্রূত
অন্দরে গেলাম । মৌন সংক্ষিপ্ত নামাজে
শুকরিয়া জ্ঞাপন করার পর শ্বেতপাথরের
মুঘল কীর্তির বিশাল মহিমা ফিরে ফিরে
দেখতে দেখতে আবিষ্ট নয়নে তুষ্ট বাইরে এলাম । তবু
খচখচে আড়ষ্টতায়
মন ছেয়ে আছে শুধু শোকাকুল
কালো বস্ত্র -আবৃত গম্বুজ
প্রতিবাদী বিষণ্ণ গম্বুজ ।
( ৩৪ লাইন )
© বদরুদ্দোজা শেখু
---------------------
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
ছুটির ঘন্টা বেজে-উঠতেই সুদর্শন তরুণ বি এস সি টিচার রফিক, চক-ডাস্টার হাতে নিয়ে ক্লাস-রুম থেকে বের হয়ে, টিচাদের জন্য নির্ধারিত রুমে গিয়ে একটি চেয়ার টেনে আয়েশে হেলান দিয়ে বসে। সিনিয়র অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকার সনে কিছুক্ষণ দু-চারটা কথা সেরে, সে তাঁর নিজ বাড়ী পানে হাঁটা শুরু করে। মনে ভাবনা তাড়া দেয়, বাড়ী গিয়ে গরু-গুলোকে পানি ও খড় দিতে হবে। তাই সে দেরি না করে দ্রুতই ছুটে চলে বাড়ী পানে। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়েছে। স্কুল থেকে এক দেড় কিলো-মিটার দূরেই তাঁর পৈতৃক বাড়ী। রফিকের বয়স ত্রিশ ছুঁই-ছুঁই করছে। সে এখনো বিয়ে করেনি। ঘরে আছে তাঁর বৃদ্ধা মা। রফিক যখন ক্লাস নাইনে আর ছোট বোন শরিফা প্রাইমারীতে পড়ে, তখন তাঁদের বাবা শফিউর রহমান হঠাৎ একদিন ইন্তেকাল করেন। সেই থেকে রফিকের উপরই এই সংসারের ভার এসে পড়ে। রফিক সংসার চালানোর জন্য বাবার রেখে যাওয়া যৎ সামান্য ফসলি জমিতে হালচাষ করে আর পাশাপাশি লেখা পড়াটাও সে চালিয়ে যায়। সন্ধ্যার পর গাঁয়ে দু-একটা টিউশনিও করে। রফিক ছাত্র হিসেবে খু্বই মেধাবী। কৃষি কাজ পাইভেট পড়ানো ও লেখাপড়া এক সনে চালিয়ে কোন রকমে দিন চলে যাচ্ছিল তাঁদের ছোট সংসারের। ছোট বোন শরিফা যখন ক্লাস টেনে উঠলো তখন পার্শ্ববর্তী গাঁ থেকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব এলো। ছেলে রেলওয়েতে চাকুরী করে, বংশ মর্যাদায়ও ভালো। রফিক এতো সুন্দর একটি প্রস্তাব পেয়ে বেজায় খুশি। সে তাঁর মা রমিছা বানুর সনে পরামর্শ করে ছোট বোন শরিফাকে বিয়ে দিয়ে দেয় এক অনারম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কিছুদিন পর রফিক বি এস সি-তে প্রসংশনীয় রেজাল্ট করে। তাঁর এতো ভালো রেজাল্টের কথা শোনে পার্শ্ববর্তী হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির প্রধান গাঁয়ের মাতুব্বর রুস্তম আলী ভূঁইয়া একদিন রফিকদের বাড়ী এসে বলে তাঁর স্কুলে বি এস সি টিচার পদে যোগদান করতে। রফিকও এমন অকল্পনীয় প্রস্তাবে তৎক্ষণাৎই রাজি হয়ে যায়। আর বলে দাদা ঠিক আছে আপনার কথা তো আর ফেলতে পারিনা? আমি দু-এক দিনের মধ্যেই স্কুলে গিয়ে জয়েন করবো ইনশাল্লাহ। রফিক যথা নিয়মে উক্ত হাই স্কুলে বি এস সি'র শিক্ষক পদে যোগদানের কাজ সমাধা করে। এর পর থেকেই রফিকের মা প্রায়ই রফিককে চাপ দিয়ে আসছে বিয়ে করে যেন সে ঘরে নতুন বৌ আনে। রফিক এতোদিন ছোট বোন শরিফার বিয়ের কথা বলে মাকে কোন-রকমে সান্ত্বনা দিয়েছে। রফিকের মা রমিছা বানু পুত্রের মুখে ছোট বোন ও সংসারের প্রতি গভীর দায়িত্ব-বোধ দেখে মনে মনে তৃপ্তি পায়। তাই ছেলের সিদ্ধান্ত রমিছা বানু মেনে নেয় নতশিরে। কিন্তু শরিফার বিয়ের হওয়ার-পর, রফিক মাকে এখন কি অজুহাত দেখাবে? এ-ভাবনাই তাঁর মগজে নীরবে বাসা বেঁধেছে।
চলবে--
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
সে-দিন চিঠি বিনিময়ের পর আরও কিছুদিন বিউটির সনে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। কথা হয়েছে, হাসি-ঠাট্টাও হয়েছে। কিন্তু একটা সময় হঠাৎ বিউটি আর আসে না! রেনু আর আমি ধরেই নিলাম, হয়তো তাঁর বিয়ে হয়ে গেছে। তাই সে এদিকে আসেনা। আমরাও চিরতরে বঞ্চিত হলাম সেই অমলিন হাসির মেয়েটির সাক্ষাৎ থেকে! তাঁর খোঁজে কখনো এস কে হসপিটালে আমরা কেউ যাইনি। কারণ সে-সময়ে একটি মেয়ের বাসায় গিয়ে খোঁজ নেবো কোন হিসেবে? তাঁর সনে আত্মীয়তা নেই, নেই রক্তের সম্পর্ক, সামান্য দোকানি হয়ে একটি যুবতী মেয়ের খোঁজ নেবো বাসায় গিয়ে এরকম দুঃসাহস তখন জাগেনি মনে। আবার কেমন যেন বেমানানও দেখায়? এমন নানা প্রশ্ন মনের ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিলো। সেই থেকে আজ অব্দি তাঁরে আর দেখিনি এই শহরে! একই শহরে বসবাস করলেও কখনো দেখা সাক্ষাৎ হয়নি অদ্যাবধি। আমরাও নিজেকে নিয়ে বিজি থাকায় বিউটির কথা ভুলেই গেলাম। জানিনা সে এখন কোথায়? কেমন আছে? বেঁচে আছে কি? নাকি নেই? না-কি নাতী-নাতনি নিয়ে তাঁর দিনাতিপাতে সময় কাটে? খুব ইচ্ছে জাগে মনে, খোঁজ পেলে দিতে হানা তাঁহার বাটে। আমি আল-হাজ ওয়াচ এ চাকুরীর আগে, ল কলেজ গেইটে মুন ওয়াচ কোং এ চাকুরী করেছি কিছুদিন। মুন ওয়াচ আজও মাথা উঁচু করে ঠাঁয় দীপ্তিমান। ইহার মালিক আমার ব্যবসায়ী গুরু (উস্তাদ) বাচ্চু ভাইয়ের তখন বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়েছে। তো আমি বরযাত্রী হয়ে মাদ্রাসা কোয়াটার লিচু বাগান রোডের সেই বিয়ে বাড়ি গেলাম। সন্ধ্যায় বিয়ের কর্ম সমাধা হলো। আমাদের নব-ভাবী দেখতে বেশ সুন্দরী। এক কথায় অপূর্ব। বিয়ের পর, আমি মাঝে মধ্যে কাটাখালি সাহেব কোয়াটারে আমার উস্তাদের বাসায় যেতাম নানান কাজে (চুপশাহ্ মাজারের পিছনে ছিল বাসাটি, সেথায় আজও আছে) তো নব-ভাবী আমার সনে, বড়ো-বোন ন্যায় বিহেব করতেন। আমি উনার সুন্দর আচরণে মুগ্ধ হই। সেই ভাবীর আরো দুটো বোন ছিল। মাঝে মধ্যে ভাবী বলতেন ---- যাও ওকে আমাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে তুমি দোকানে যেয়ো? জী-হুকুম মহারানী বলে চলে যেতাম। আসলে তখনকার দিনে সময়টাই যেন মধুময় ছিল। ছিলো প্রাণবন্ত। কোন নোংরামি বা বাজে চিন্তা মনে আসতো না বা ছিল না। সেই শ্রদ্ধেয় ভাবীর সনে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে দেখা সাক্ষাৎ নেই! অথচ আমরা একই শহরে বসবাস করি! কি অদ্ভুদ তাই-না? জীবন যেন এমনই, সে চলে সময়ের সনে পাল্লা দিয়ে। একদিন হঠাৎই চোখ পড়ে ফেসবুকে, সাংবাদিক জয়নাল ভাইয়ের ভালোবাসার বন্ধন গ্রুপে। দেখি আমার বড়ো-বোন-প্রিয়, সেই সাগরিকা সুলতানা (সাগর) ভাবী উক্ত গ্রুপটির সম্মানিত মডারেটর! আমি তাঁকে ফ্রেন্ডস্ রিকোয়েস্ট পাঠাই, তিনি ইহা সাদরে গ্রহন করেন। কিন্তু তিনি আমায় চিনেননি। না চেনার কারণও আছে ঢের? উনার বিয়ের সময় বা পরে, আমি বেশ হ্যাংলা ছিলাম। আজ বয়সের স্রোতে ভেসে স্বাস্থ্য বেড়েছে। বয়স বেড়েছে। আর উনি আমাকে আমার (নেইক) নামেই চিনতেন। আমার এফ বি আইডি আসল নাম দিয়েই খোলা। আমার আসল নামটি তিনি হয়তো জানতেন না বলে মনে হয়। আমার অনেক স্বজনরাও আমার আসল নাম জানেন না। তাঁরা আমাকে নেইক নামেই চেনেন ও ডাকেন। মেসেঞ্জারে গিয়ে ভাবীকে বলি- ভাবী আমি অমুক------ তখন তিনি অবাক হয়েই আমায় চিনলেন! আর বললেন এদ্দিন পর? তো তুমি কেমন আছো? একদিন বাসায় এসো? ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা আমার জন্য পরম পাওয়া। আমি কাহারো মন-মন্দিরে জায়গা করে নিয়েছি তা বেশ সুখকর বটে। সাগর ভাবীর সনে পুনর্মিলন ঘটে ভালোবাসার বন্ধন গ্রুপের মাধ্যমে তাও আজ প্রায় ছয় সাত মাস হয়ে গেলো। তাঁহার সনে স্ব-শরীরে সাক্ষাৎ করতে পারিনি আজও! যদিও স্টেডিয়ামের পিছনে নতুন বাসায় যেতে নিমন্ত্রণ দিয়ে রেখেছেন। এ নাদান আজও সময় পায়নি, সেই দাওয়াত কবুলের। আমি তাঁকে নিয়ে একটি কবিতাও লিখেছি। নাম (কতোদিন দেখিনি তাঁরে) ধন্যবাদ ফেসবুক ধন্যবাদ ভালোবাসার বন্ধন গ্রুপের কর্ণধার সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন ভাইকে। হারানো মানিক ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
চলবে--
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
মানবকুল চলতে-ফিরতে মনের অজান্তে অনেক ভুল করে বসেন। তাঁরা ওয়াকিবহাল নন-যে হর-হামেশা মুখ ফসকে কতক অরুচিকর অবাঞ্চিত কথা বলে-থাকেন! ঘড়ি দোকানিরা ইলেকট্রনিক্স ঘড়ি বিক্রিকালে ক্রেতাকে জ্ঞান-গর্ব উপদেশ দিয়ে বলেন, টিপাটিপি করবেন না? টিপাটিপি করলে ইহা নষ্ট হয়ে যাবে। পাঠক একটু ভাবুন-তো? এই-যে টিপাটিপি শব্দটি কতটুকু শালীন বা রুচিশীল? বর্তমান-কালে মোবাইল আসায় ইহা রিচার্জ করতে হয়, টাকা বিকাশ করতে হয়। কল দিয়ে কথা বলতে হয়। মোবাইল যেন প্রত্যেক মানুষের জীবনে অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোবাইল রিচার্জ বা টাকা বিকাশের পর প্রায় সবাই অকপটে বলেন, টাকাটা ঢুকেছে? অনেক বাবা মেয়ের কাছে ফোন করে জানতে চায়, টাকাটা ঢু-- কিনা? কল ঢুকছে কিনা! পাঠক ফের ভাবুন-তো, ঢুকেছে কথাটি কতটুকু নীচু মানের? বা শ্লীল-অশ্লীল? বহুদিন আগে আসাদ মার্কেটে গিয়েছিলাম কিছু কিনতে। পাশের দোকানে ক'জন নারী গ্রাহক ছিল। অপর পাশের দোকানি পঞ্চাশোর্ধ হবে বয়স। তিনি নির্লজ্জের মতো সবারে শুনিয়ে জাতীয় সংগীতের প্রথম চরণ-আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, বারবার গাইছেন! বুঝতে আর বাকি নেই, তিনি দেশ-প্রেমে নয়, বিকৃত মস্তিষ্কের বহিঃ প্রকাশ ঘটাচ্ছেন রূপসী নারীদের ইঙ্গিত করে। তার বয়স বিবেচনায় হীন মানসিকতা দেখে আমি স্তম্ভিত! প্রতিবাদ করার সুযোগ না থাকায় সেথা হতে নীরবে চলে আসি। এমনই নিকৃষ্ট অম্ল-মধুর মিশ্রণে চলছে সমাজের মানুষ। ভুল পথে, ভুল কথা, বলে চলছে যথা-তথা! যাই হোক, আমি আগের পর্বে বলেছি, কৈশোর থেকেই লেখা-লেখির প্রবল ইচ্ছে শক্তি ছিল আমার। তাই বিভিন্ন পত্রিকার চিঠিপত্র বিভাগে লিখতাম, কখনো ছাপাতো আবার কখনো ছাপাতো না। যখন ছাপাতো তখন আনন্দে বুক ভরে উঠতো। আমার আরেকটি দারুন শখ ছিল, ঈদ এলেই প্রিয়-জনকে ঈদ কার্ডে বা পোস্ট কার্ডে শুভেচ্ছা জানানো। তখন পোস্টকার্ড এর মূল্য ছিল পঁচিশ পয়সা। আর ইনভেলাপ এর মূল্য এক টাকা। তাই পোস্ট অফিসের সনে আমার পরিচয় ও নিবিড় সম্পর্ক কৈশোর থেকেই। একদিন বিকালে, ওল্ড পুলিশ ক্লাব রোডে (স্বদেশি বাজার সংলগ্ন) দিবা-নৈশ পোস্ট অফিস রয়েছে। সেটি আজও বৃদ্ধ ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে শির উঁচু করে। যেহেতু অফিসটি সরকারী, সো রং-টং করা কি অতি জরুরী? চুন রং ছাড়াই বুড়ো কায়ায় ঠাঁয় দাঁড়ানো। তাই ইহাকে বৃদ্ধ বললাম। তো সেথা চিঠি পোস্ট করতে যাই। বিকাল হওয়ার সুবাধে তেমন ভীড় নেই। কাউন্টারের ভেতরে একজন বসে কাজ করছেন। অন্যজন হয়তো পোস্ট মাস্টার হবেন। তিনি ভেতরে একটু দূরে বসে পত্রিকা পড়ায় মগ্ন। কাউন্টারের বাহিরে আমিই একমাত্র তরুণ। পাশেই মুমিনূন্নিসা কলেজের পোশাক পরিহিতা ডাংগর তিন তরুণী। ওরাও চিঠি পোস্টের তরে এসেছে মনে হলো। তো আমি ইনভেলাপে ঠিকানা লিখা শেষ করে এক কর্ণারে আঠা লাগাতে গেলাম। কিন্তু আঠা শুকিয়ে যাওয়াতে মুখের লালা দিয়ে কাজ সমাধা করলাম। উল্লেখ্য সবাই জানেন যে, ইনভেলাপে সুপ্ত-ভাবে আঠা লাগানো থাকে। জলের স্পর্শে তা সতেজ হয়। তো ওরাও আমার দেখাদেখি মুখের লালা দিয়ে খামের মুখটি জোড়া লাগিয়ে কাউন্টারে উপর রেখে হাতের তালু দিয়ে জোরে দুটো চাপ দিলো আর ফিসফিস করে বললো, নে-বাবা দিলাম তোরে ছ্যাপ দিয়া! ওর সঙ্গি অন্য দুই মেয়ে হো হো হো করে হেসে দিল। সেই মেয়েটিও হেসে দিলো। আমি ওর কথা শ্রবণে মুচকি হাসলাম। মাথা নীচু করে অন্যমনস্ক ভাবে, মনে মনে ভাবলাম, ছ্যাপ মানে থুথু, তা ব্যবহারের নানা প্রকার ভেদের কথা!
চলবে--
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
প্রতিদিন স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া অনেক মেয়েই আসতো দোকানে। যুগ পাল্টেছে, পাল্টেছে সামাজিক পরিবেশ! এখন পুরুষের চেয়ে মেয়ে বা নারী ক্রেতাই বেশি পায় দোকানিরা। তো সেই আশির দশকে যে-সব মেয়ে দোকানে আসতো, এদের মাঝে উজ্জল শ্যাম বর্ণা একটি মেয়ে আসতো তাঁর নাম ছিল বিউটি। সেই বিউটির সনে প্রতিদিনই সাক্ষাৎ হতো, কুশল বিনিময় হতো। অনেক কথাও হতো। সব মিলিয়ে সুন্দর মনোরম ও নির্মল এক পরিবেশ ছিল। ছিল নিত্যদিনই দেখা সাক্ষাৎ, শুধু সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ছাড়া। তাঁর সনে বিভিন্ন সময় কথা বলে যা জেনেছি আমরা। আর তা হলো, তাঁর বাবা এস কে হসপিটালে চাকুরী করেন। এবং তাঁরা ওই এস কে হসপিটালের ফ্যামেলি কোয়াটারেই থাকেন। বিউটি এবং আরও দু-একটি মেয়ে সেই এস কে হসপিটাল হতে প্রতিদিন পায়ে হেঁটে মহাকালি স্কুলে আসতো। ওরা প্রায় এক দেড় কিলো মিটার পদব্রজেই আসতো। এরকম আরও অনেক মেয়েই পদব্রজেই তখন নিত্য আসা যাওয়া করতো স্কুল ও কলেজে। ওই সকল মেয়েদের মধ্যে বিউটি ছিল ভিন্ন প্রকৃতির। সে খুবই হাসিখুশি ও অমায়িক স্মার্টনেস ছিল তাঁর মধ্যে। তাঁর আচরণ আজও আমার মনের ঘর আলোকিত করে। এক কথায় যদি বলি তাহলে বলবো অসাধারণ প্রাণবন্ত এক কিশোরী ছিল সেই বিউটি। নামের সনে তাঁর আচরণ ও বাচন ভঙ্গির হুবহু মিল খোঁজে পেয়েছিলাম আমরা! সে সহজেই অপরিচিতজনকে আপন করে নিতে পারতো। একদিন সে হঠাৎ করেই সকালে স্কুলে যাবার পথে দোকানে এসে রেনুর হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেয়। আর বলে যে আমি চলে যাবার পর ইহা খুলবেন? এর আগে নয়? আর বিকালে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে যেন ইহার উত্তর অবশ্যই পাই? এই বলে সে হনহন করে স্কুল পানে চলে গেলো। রেনু প্রতিদিন ন্যায় সেদিনও দোকানের কাউন্টারে বসা ছিল। আমি ভেতরে কী যেন কাজে ব্যস্ত ছিলাম। সেই মহাকালি স্কুলটি আজও দণ্ডায়মান তার চিরায়ত অম্ল-মধু কাঠামো নিয়ে। স্কুল ও কলেজ আছে বেঞ্চ আছে টিচার আছে পরিপাটি পরিবেশ সবই আছে। নেই শুধু পুরানো শিক্ষক মণ্ডলী ও বিউটিরা। বিউটিদের স্থান দখল নিয়েছে নূতনেরা! এটাই হয়তো প্রকৃতির চিরায়ত নিয়ম? নূতনেরা আসবে পুরানোরা বিদায় নেবে। এই আসা-যাওয়ার ঘূর্ণিপাক স্রোতেই যেন ঘূর্ণয়নে চলছে বসুন্ধরা! রেনু চিরকুটটি খোলে নিজে পড়লো। এবং আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,নাও দেখো পাগলি কী লিখেছে? আমি সেই ছোট্ট কাগজটি পড়ে যৎ মুচকি হাসলাম। আসলেই মেয়েটি পাগলি। সে ইহাতে লিখেছে- i love you. এর মানে কি?
চলবে---
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
বিউটি'র কৌতুহলোদ্দীপক কর্মে রেনু ও আমি সেদিন খুব হাসলাম। আর ভাবলাম, নাইন-টেনে পড়ুয়া একটি মেয়ে এতো সহজ কথার মানে জানতে চায় কেন? আমরা যদি সেদিন সহজেই তাঁর প্রশ্নের উত্তরটি দিয়ে দি, তাহলে এটা বেকুবের মতোনই দেখাবে বলে মনে মনে হিসাব কষলাম, এবং চিরকুটটি হাতে নিয়ে আমরা দুজনই হাস্যরসে আবল-তাবল ভাবতে লাগলাম। রেনু বললো, এতো বড়ো মেয়ে আই লাভ ইউ এর মানে বুঝেনা! আমি বললাম আরে বুঝে, সে হয়তো ভিন্ন কোন ফন্দি এঁটেছে, বা মজা করার জন্যই এটি করেছে? নয়তো এও বুঝতে চাইছে এটার উত্তর লিখা মানেই তো তাঁকে ভালোবাসি এই শব্দটা প্রকাশ করা? তারপরই হয়তো হবে শুরু প্রেম প্রেম খেলা। রেনু বললো এখন কী উত্তর দেয়া যায় একটু চিন্তা করো? বিকালে তাঁকে এর উত্তর দিতে হবে বলে গেছে। আমি বললাম নো চিন্তা ব্রাদার? এটার চমৎকার একটি উত্তর আমি একটু ঘুরিয়ে দেবো। দেখি শালার মনে কী? রেনু জানতে চাইলো সেটা কিভাবে? আমি বললাম নজরুল সংগীত এর দুটো লাইন আমি লিখে দেবো। ইহাতে, সে বিচক্ষণ হলে, উত্তর খোঁজে পাবে, আবার উত্তর খোঁজে পাবেও না! বেশ দারুন আইডিয়া তাই না? রেনু বললো দেখো আবার কোন সমস্যা যেন না হয়? আমি বললাম আরে না, সমস্যা হবে কেন? আমরা তো প্রেমপত্র লিখছিনা? প্রসঙ্গত ছোট বেলা থেকেই চিঠি পত্র লিখার অভ্যাস ছিল আমার। এবং পত্র-পত্রিকায় অল্প-স্বল্প লেখা-লেখির অভ্যাসও ছিল। তা-ছাড়া আমি সেই দশ বারো বছর বয়স হতেই কাজী নজরুল ইসলামকে প্রচণ্ড ভালোবাসতাম। তাঁর অসংখ্য গান আমার তখন নখ-দর্পণে বা মুখস্ত ছিল শ্রবনে। আমি রেনুকে বললাম, ক্লাস নাইনে পড়ুয়া ষোড়শী আই লাভ ইউ এর মানে জানে-না এটা হতে পারেনা? আমার মনে হয় সে অন্য কোন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে? তাই আমি তাঁর কথার উত্তর একটু ঘুরিয়ে দিচ্ছি। যেই ভাবনা সেই কাজ। আমি নজরুল সংগীতের দুটো লাইন লিখে রাখলাম একটা কাগজে। সেই লাইন দুটো এমন (তুমি শুনিতে চেয়োনা আমার মনের কথা,
দখিনা বাতাস ইঙ্গিতে বুঝে,কহে যাহা বনলতা।)
এই দুটো লাইন লিখে কাগজটি ইনভেলাপ আকারে ভাঁজ করে দিলাম রেনুর হাতে। সেভাবেই রেনু বিকেলে বিউটির হাতে ইহা দিয়ে বললো, এটাতে আপনার প্রশ্নের উত্তর লেখা আছে। সুতরাং বাসায় গিয়ে খুলবেন? এখানে নয়? বিউটি কাগজটি হাতে নিয়ে ভীষণ খুশি। সে আহ্লাদে মৃদু হাসতে হাসতে দারুন তৃপ্ত মনে চলে গেলো। আমরা বিউটির প্রতিক্রিয়া জানার তরে অপেক্ষায় রইলাম। পরদিন সকালে সে দোকানে এসেই হেসে বললো, আগে আমি জানতে চাই, আপনেরা দুই-জনের মধ্যে কবি সাহেব কে? সেই কবিকেই আমার দরকার? হা হা হা করে আমরা দুজনই হেসে দিলাম। সেদিন আমরা কেউই কবির পরিচয় প্রকাশ করিনি। শুধু বললাম প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন কি?
চলবে---
Majharul Islam
Star Point: 4.05 of 5.00
শৈশব পেরিয়ে কৈশোর যখন উচ্ছ্বল রূপে, আন্তঃ নগর ট্রেনের মতো ঝক-ঝকাঝক শব্দে ছুটে চলেছে সমানতরাল লৌহ-পাতের উপর দিয়ে,তার নিজ গন্তব্যের পানে। তখন আচমকা কালের রোষানল স্বশরীরে এসে সম্মুখে হয় হাজির! সংসার নামক অশরীরি দানব, মানবকে গ্রাসে হ্যাচকা টানে, নেয় ছিনিয়ে তার পানে! বাধ্য হয়েই মাধ্যমিক পাঠশালের ইতি টানি। অতঃপর কুলুর বলদ ন্যায় টেনে চলেছি অহরাত মা ও অনুজদের তরে সংসারের ঘানি। সময় তার নিজস্ব গতিতেই চলে! কারও জন্য তার দায়বদ্ধতা নেই বিন্দুমাত্র। নেই কোন কৈফিয়ত। সময়ের সেই প্রবল স্রোতে পড়ে, জড়াই নিজেকে ব্যবসায়ীদের কাতারে। ব্যবসা করতে যেয়ে প্রথমে দুজন মহতি মানুষের সন্ধান পেয়ে তাঁদের দোকানে কর্মচারীর দায়ীত্ব পালন করতে হয়েছে অনেক দিন। তারপর এক সময় নিজে দোকান খোলে বসি। যা আজও চলেছি সেই ব্যবসায়ী জীবন বয়ে, কালের ঝড় ঝঞ্ঝা সয়ে। মানুষের ক্ষণস্থায়ী জীবনে কতোকিছু ঘটে! কতো কিছু রটে! কতো ঘাত-প্রতিঘাত আসে এই ক্ষুদ্র জীবনে! মানুষ চলার পথে কতোজনের সনে হয় সখ্য, তার কোন গানিতিক হিসেব কেউ রাখেনা কোনদিন। বা রাখা সম্ভবও নয়। চলার পথে চলাচলে বহুজন ন্যায়, রেনু নামে একজনের সনে পরিচয় ও সখ্য গড়ে উঠে। সেই রেনু আজ নেই ইহ-জগতে! তাঁর স্মৃতি আমাকে প্রায়ই আচ্ছ্বন্ন করে। সে স্ত্রী-সন্তান আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে গুডবাই জানিয়ে পরপারের ভেলায় চড়ে পারি-জমিয়েছে ওপারে! জানা নেই রেনুর পরিবার আজ কেমন আছে? কেমনে চলে? রেনু একটা সময় ময়মনসিংহ শহর ত্যাগ করে পিতৃ-ভিটা কিশোরগঞ্জে স্থায়ী বসতি গেড়ে। আর সেখানেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। রেনু আর আমি, কিছুদিন গাঙিনার পাড়ে, আল-হাজ ওয়াচ কোং নামক দোকানে চাকুরী করেছি। উক্ত দোকানটি মাথা উঁচু করে ঝলমলিয়ে আজো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে গাঙিনার পাড়ে। দোকানটি রেনুর কাজিনের হলেও রেনু সেথায় বেতনে চাকুরী করতো। আল-হাজ ওয়াচ কোং আছে কিন্তু ইহার প্রতিষ্ঠাতা শ্রদ্ধেয় গোলাপ ভাই নেই! উক্ত দোকানের বর্তমান কর্ণধার খোকা ভাই পঁয়ষট্টি বসন্ত পার করেও আজও যেন তরুণ! তাঁর বড় ভাই বাচ্চু ভাই, ডায়াবেটিস এ কাবু হয়ে আজও জীবিত আছেন। তাঁদের সনে আমার এখনো গুড সম্পর্ক বজায় রয়েছে। রেনু দেখতে ফর্সা, বেশ হ্যান্ডসাম ও টল ফিগারের ছিল। রেনুর সনে আমার বেশ ভাব গড়ে উঠে অল্প দিনেই। আমরা দুজন সহকর্মী, বয়সেও প্রায় সম-বয়সী ছিলাম। রেনু আমার থেকে দুই তিন বা চার বছরের বড় হবে হয়তো। আমরা সকাল থেকে রাত অব্দি, দুজনেই দোকানে ডিউটি করতাম। দোকান মালিক খোকা ভাইও বসতেন দোকানে। রাত দশটায় দোকান বন্ধ করে আমরা নিজ নিজ বাসায় চলে যেতাম। এটা ছিল রুটিন মাফিক কর্ম। সেটা ঊনিশ শত সাতাশি থেকে নব্বই সাল পর্যন্ত। একানব্বই থেকে আমি নিজে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। সেই পঁচাশি ছিয়াশি সাল থেকে নির্লোভ দেখেছি স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথের উত্তপ্ততা। ছাত্র দলের ওহাব আকন্দ প্রমুখ, ছাত্রলীগের মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, ছাত্র ইউনিয়নের হামিম ভাই, মিল্লাত ভাই ও সজল ভাই, জাসদ ছাত্র লীগের নজরুল ইসলাম চুন্নু ভাই, আরও বহু ছাত্র নেতারা সবাই মিলে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর নির্দেশে ময়মনসিংহের রাজপথ প্রকম্পিত রাখতো সর্বক্ষণ। সজল ভাই সাংবাদিক, মিল্লাত ও চুন্নু ভাই বর্তমানে প্রথিতযশা আইনজীবি। সকাল দুপুর আর রাত নাই একের পর এক মিছিল আসতো। তখন প্রায়ই হরতাল হতো। হরতাল পেলেই আমি আর রেনু দুজন বাইসাইকেলে চড়ে নানা স্থানে বেড়াতে যেতাম। গাঙিনার পাড় সংলগ্ন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মহাকালী গার্লস স্কুল অন্যতম। সেই স্কুলের বিভিন্ন মেয়ে স্কুলে যাওয়া আসার পথে ঘড়ি কিনতে বা নতুন ঘড়ি কী এসেছে তা দেখতে, হেন নানা বাহানায় আমাদের দোকানটিতে ঢু-মারতো। আমরা সব সময় ওদের সনে ভালো আচরণ ও হাসি খুশি কথাবার্তা বলতাম। হেন প্রীতির বন্ধনে আমরা ছিলাম বন্ধি। কারও মনে কোন খারাপ ভাব বা কু-চিন্তা কখনই উদিত হতোনা। যদিও সৃষ্টির শাশ্বত চাহিদার টান দেহমনে উদিত হতো। আর সেই শাণিত ক্ষুরধার টানে তনুমন ব্যাকুল থাকতো। কিন্ত সামাজিক পারিপার্শ্বিক বিবেচনায়, বিশেষ করে ব্যবসায়িক দিকটি বিচার বিশ্লেষণে, সেই অমিয় ভাবকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা ছিল সর্বদাই আপ্রাণ।
চলবে---
Shibani Bagchi
Star Point: 4.04 of 5.00
মৃণাল কান্তি রায়
Star Point: 4.26 of 5.00
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
কাপড় ধুচ্ছে মুশতাক সামি
আছে এখন বিজি,
কি জানি কোথায় যাইবো
ঘুরতে নিবো গাড়ী।
আর যে যায় বলে বলুক
ছেলে কিন্তু ভালো,
ভাল্লাগে ওরে ভিষণ রকম
আদর নিস আরও।
নক করেছি একটু আগে
জবাব ছিলো এটা,
কি আর করার অপেক্ষা থেকে
কবিতাটুকু লিখা।।
এখনো বিজি ভাইটা আমার
কতো কষ্ট করছে,
বিয়ের জন্য মেয়ে খোঁজার
পারমিশন চলছে!
#জ্বিহুজুর
#MHJS
মঞ্জুরুল হোসেন জুবায়েদ শেখ
Star Point: 4.02 of 5.00
কাপড় ধুচ্ছে মুশতাক সামি
আছে এখন বিজি,
কি জানি কোথায় যাইবো
ঘুরতে নিবো গাড়ী।
আর যে যায় বলে বলুক
ছেলে কিন্তু ভালো,
ভাল্লাগে ওরে ভিষণ রকম
আদর নিস আরও।
নক করেছি একটু আগে
জবাব ছিলো এটা,
কি আর করার অপেক্ষা থেকে
কবিতাটুকু লিখা।।
এখনো বিজি ভাইটা আমার
কতো কষ্ট করছে,
বিয়ের জন্য মেয়ে খোঁজার
পারমিশন চলছে!
#জ্বিহুজুর
#MHJS
Sukanta pal
Star Point: 4.18 of 5.00
ছিদল পড়েছে মনে থেকে ঘরে বন্দী
এই বুঝি করোনার ছিল মনে ফন্দী।
কতদিন ইস্কুল পড়ে আছে বন্ধ
খুলবে যে কবে তার নাই নাম গন্ধ।
এরই সাথে আম্ফান ইয়াসেরা ভাঙে গাছ
নদী ছেড়ে রাস্তায় খেলে নাকি ল্যাটা মাছ।
কত ঘর গেছে ভেঙে উড়ে গেছে কত চাল
আম বট কাঁঠালের পড়ে পথে কত ডাল।
শয়ে শয়ে আসে লাশ শ্মশান আর কবরে
টিভি খুলে বসলেই ভয় লাগে খবরে।
ঘরে বসে ঠুকোমুকি থাকি নাতো চুপচাপ
এরই সাথে লেগে থাকে পিঠে পড়া ধূপধাপ।
Sukanta pal
Star Point: 4.18 of 5.00
Online | |
Members | 0 |
Guests | 4 |
Visitors Counter | |
Total | 1696706 |
Today | 370 |
Yesterday | 289 |
This Week | 3474 |
This Month | 13859 |
Top 10 countries of this month | |
France | 7625 |
United States | 6170 |
Ireland | 31 |
Bangladesh | 6 |
Singapore | 4 |
United Kingdom | 2 |