
Majharul Islam
কবি ও সাহিত্যিক
4.0
Story
সে-দিন চিঠি বিনিময়ের পর আরও কিছুদিন বিউটির সনে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। কথা হয়েছে, হাসি-ঠাট্টাও হয়েছে। কিন্তু একটা সময় হঠাৎ বিউটি আর আসে না! রেনু আর আমি ধরেই নিলাম, হয়তো তাঁর বিয়ে হয়ে গেছে। তাই সে এদিকে আসেনা। আমরাও চিরতরে বঞ্চিত হলাম সেই অমলিন হাসির মেয়েটির সাক্ষাৎ থেকে! তাঁর খোঁজে কখনো এস কে হসপিটালে আমরা কেউ যাইনি। কারণ সে-সময়ে একটি মেয়ের বাসায় গিয়ে খোঁজ নেবো কোন হিসেবে? তাঁর সনে আত্মীয়তা নেই, নেই রক্তের সম্পর্ক, সামান্য দোকানি হয়ে একটি যুবতী মেয়ের খোঁজ নেবো বাসায় গিয়ে এরকম দুঃসাহস তখন জাগেনি মনে। আবার কেমন যেন বেমানানও দেখায়? এমন নানা প্রশ্ন মনের ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিলো। সেই থেকে আজ অব্দি তাঁরে আর দেখিনি এই শহরে! একই শহরে বসবাস করলেও কখনো দেখা সাক্ষাৎ হয়নি অদ্যাবধি। আমরাও নিজেকে নিয়ে বিজি থাকায় বিউটির কথা ভুলেই গেলাম। জানিনা সে এখন কোথায়? কেমন আছে? বেঁচে আছে কি? নাকি নেই? না-কি নাতী-নাতনি নিয়ে তাঁর দিনাতিপাতে সময় কাটে? খুব ইচ্ছে জাগে মনে, খোঁজ পেলে দিতে হানা তাঁহার বাটে। আমি আল-হাজ ওয়াচ এ চাকুরীর আগে, ল কলেজ গেইটে মুন ওয়াচ কোং এ চাকুরী করেছি কিছুদিন। মুন ওয়াচ আজও মাথা উঁচু করে ঠাঁয় দীপ্তিমান। ইহার মালিক আমার ব্যবসায়ী গুরু (উস্তাদ) বাচ্চু ভাইয়ের তখন বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়েছে। তো আমি বরযাত্রী হয়ে মাদ্রাসা কোয়াটার লিচু বাগান রোডের সেই বিয়ে বাড়ি গেলাম। সন্ধ্যায় বিয়ের কর্ম সমাধা হলো। আমাদের নব-ভাবী দেখতে বেশ সুন্দরী। এক কথায় অপূর্ব। বিয়ের পর, আমি মাঝে মধ্যে কাটাখালি সাহেব কোয়াটারে আমার উস্তাদের বাসায় যেতাম নানান কাজে (চুপশাহ্ মাজারের পিছনে ছিল বাসাটি, সেথায় আজও আছে) তো নব-ভাবী আমার সনে, বড়ো-বোন ন্যায় বিহেব করতেন। আমি উনার সুন্দর আচরণে মুগ্ধ হই। সেই ভাবীর আরো দুটো বোন ছিল। মাঝে মধ্যে ভাবী বলতেন ---- যাও ওকে আমাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে তুমি দোকানে যেয়ো? জী-হুকুম মহারানী বলে চলে যেতাম। আসলে তখনকার দিনে সময়টাই যেন মধুময় ছিল। ছিলো প্রাণবন্ত। কোন নোংরামি বা বাজে চিন্তা মনে আসতো না বা ছিল না। সেই শ্রদ্ধেয় ভাবীর সনে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে দেখা সাক্ষাৎ নেই! অথচ আমরা একই শহরে বসবাস করি! কি অদ্ভুদ তাই-না? জীবন যেন এমনই, সে চলে সময়ের সনে পাল্লা দিয়ে। একদিন হঠাৎই চোখ পড়ে ফেসবুকে, সাংবাদিক জয়নাল ভাইয়ের ভালোবাসার বন্ধন গ্রুপে। দেখি আমার বড়ো-বোন-প্রিয়, সেই সাগরিকা সুলতানা (সাগর) ভাবী উক্ত গ্রুপটির সম্মানিত মডারেটর! আমি তাঁকে ফ্রেন্ডস্ রিকোয়েস্ট পাঠাই, তিনি ইহা সাদরে গ্রহন করেন। কিন্তু তিনি আমায় চিনেননি। না চেনার কারণও আছে ঢের? উনার বিয়ের সময় বা পরে, আমি বেশ হ্যাংলা ছিলাম। আজ বয়সের স্রোতে ভেসে স্বাস্থ্য বেড়েছে। বয়স বেড়েছে। আর উনি আমাকে আমার (নেইক) নামেই চিনতেন। আমার এফ বি আইডি আসল নাম দিয়েই খোলা। আমার আসল নামটি তিনি হয়তো জানতেন না বলে মনে হয়। আমার অনেক স্বজনরাও আমার আসল নাম জানেন না। তাঁরা আমাকে নেইক নামেই চেনেন ও ডাকেন। মেসেঞ্জারে গিয়ে ভাবীকে বলি- ভাবী আমি অমুক------ তখন তিনি অবাক হয়েই আমায় চিনলেন! আর বললেন এদ্দিন পর? তো তুমি কেমন আছো? একদিন বাসায় এসো? ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা আমার জন্য পরম পাওয়া। আমি কাহারো মন-মন্দিরে জায়গা করে নিয়েছি তা বেশ সুখকর বটে। সাগর ভাবীর সনে পুনর্মিলন ঘটে ভালোবাসার বন্ধন গ্রুপের মাধ্যমে তাও আজ প্রায় ছয় সাত মাস হয়ে গেলো। তাঁহার সনে স্ব-শরীরে সাক্ষাৎ করতে পারিনি আজও! যদিও স্টেডিয়ামের পিছনে নতুন বাসায় যেতে নিমন্ত্রণ দিয়ে রেখেছেন। এ নাদান আজও সময় পায়নি, সেই দাওয়াত কবুলের। আমি তাঁকে নিয়ে একটি কবিতাও লিখেছি। নাম (কতোদিন দেখিনি তাঁরে) ধন্যবাদ ফেসবুক ধন্যবাদ ভালোবাসার বন্ধন গ্রুপের কর্ণধার সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন ভাইকে। হারানো মানিক ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
চলবে--
on test